Welcome to Bali High School (H.S.)

Bali High School (H.S.)is an eminent higher secondary school in West Bengal, India, established in 1946. This school is recognised by West Bengal Board Of Secondary Education. Index No. G3-008. WBCHSE Recognition code No. 1117034. Read More
  • Thanks Welwishers

    • We are thankful to the benevolents who reach their helping hands for the devlopment of the sehool... Read More
  • Stuff Zone

    • We the stuff of Bali High School. Our promise to serve the best for students and school. Read More
  • Students' Corner

    • Our students' activities beyond accademic works in the sports and cultural fields are noteworthy. Read More
  • Glorious Moments

    • Our student Supriti Maji obtained a bright result in H.S. Exam. 2020. She scored 493 marks out of 500.Read More

অণুগল্প ।। সন্তু চ্যাটার্জী


মাসি


মাস পয়লা পেরিয়ে দু-চার দিন গড়াতেই সুজয়ের মনটা অস্থির হয়ে ওঠে। অস্থির হবারই কথা । lockdown এর জন্য আজ প্রায় দিন পনেরো  সে ঘরবন্দি ।ও দিকে স্কুলবন্ধ, তাই বাড়ি থেকে ১৮০ কিমি দূরের কর্মস্থলে যাবার ও সেখানে আর থাকার কোনো কারন নেই।কিন্তু সমস্যা হলো, ঐ খানের বাড়িভাড়া ও বিশেষত তাকে ১৫ বছর ধরে মাতৃস্নেহে আগলে রাখা দুঃস্থ, সহায় সম্বলহীন ও ৬৫ বছর বয়সেও রীতিমত খেটে খাওয়া মাসির মাস মাইনের বকেয়া টাকাটা পাঠানো হয়নি ।
সুজয় মনস্থির করে , না আর দেরি নয় । যে করেই হোক আজই তাকে একটা ব্যবস্থা করতে হবে। একটু ভেবে নিয়ে সুজয় তার যথেষ্ট সচ্ছল retired bank officer বাড়িওয়ালা কে ফোনে ধরে। " হ্যালো রমেন বাবু , আমি সুজয় বলছি । আপনারা সবাই ভালো আছেন তো ? " ও পাশ থেকে একটু থেমে ভারী গলায় উত্তর আসে - " হ্যাঁ , আছি । আপনি ? " সুজয় বলে " হ্যাঁ , আমিও একপ্রকার আছি। বলছিলাম যে, আপনি যদি আপনার account no টা পাঠাতেন - তো আমি বাড়িভাড়া টা পাঠিয়ে দি । সুজয়ের কথা শেষ হবার আগেই গদগদ গলায় রমেন বাবু - হ্যাঁ হ্যাঁ পাঠাচ্ছি, এখনই what's app করে দিচ্ছি।
মেঘ কেটেছে এই আশায় , সুজয় এবার তার মনের কথাটা রমেন বাবুর কাছে পারে - " হ্যালো রমেন বাবু , বলছি আপনার বাড়ি ভাড়ার সাথে আমি মাসির টাকাটাও পাঠিয়ে দিচ্ছি কেমন । আপনি আপনার সুবিধে মতো  সময় বলুন, আমি মাসিকে তা জানিয়ে দিচ্ছি , উনি  না হয় যথা সময়ে এসে আপনার বাড়ির দরজার বাইরে থেকেই নিয়ে যাবে " । এবারও প্রায় সাথে সাথে - "না , না আপনি আমার টাকাটাই পাঠান " । ও পাশ থেকে লাইনটা কেটে যায়।
ঘর দুয়ারে মুখের উপর দড়াম করে কেউ যেন দরজা বন্ধ করে দেয় । একরাশ হতাশা, বিরক্তি ও যারপরনাই মনকষ্ট নিয়ে , সুজয় মাসিকে ফোন করে - "হ্যালো মাসি , কেমন আছেন ? " ও পাশ থেকে কেউ যেন হঠাৎ করে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষটিকে খুঁজে পায়, অভিমানের সুর ভেসে আসে - " এই দ্যাখো বাবা, এতদিনে তোমার মাসিকে মনে পড়লো ?" আমতা আমতা করে সুজয় বলে " না মাসি, আসলে ফোন করা হয়নি , মানে " । যাক বেশ করেছ বাবা - আগে বলো দেকিনি কেমন আছো , বউমা , দাদু ভাই কেমন আছে , বলি বাড়ির সবাই ভালো আছেন তো ?  কি সময় পরলো গো, এতো বাপের জন্মেও দেকিনি " । বহুদিনের চেনা , মাসির সেই বকুনি, হাল্কা মেজাজ ও অকৃত্রিম ভালোবাসার ছোঁয়া পেয়ে সুজয় মনে বল পায় । সে বলে " মাসি আপনার টাকাটাও তো এখনো পাঠাতে পারলাম না " । মুখের কথা প্রায় কেড়ে মাসি বলে ওঠে - " হায় দেখো, এই বিপদের দিনে তুমি এই সব ভাবছো ? আমাকে নিয়ে তোমার এত চিন্তা করতে হবে নে । তুমি বরং তোমার বাড়ি ওয়ালার খবর নাও । বলেই সেই পরিচিত খুনসুটি মার্কা হাসি । সুজয় বলেই চলে " মাসি বলছি , আমার মতো আরও একজন মাস্টারমশাই এর ও তো আপনি রান্নাবাড়ি করতেন, তিনিও বাড়ি চলে গিয়েছেন না ? ধমকের সুর উল্টো দিক থেকে " হ্যাঁ গিয়েছে , তো তোমার কি ? না, বলছিলাম , এই দুর্দিনে আপনার হাত তো প্রায় ফাঁকা । যদি আপনি আপনার bank এর নম্বর টা দিতেন তো আমি এখনই টাকাটা পাঠিয়ে দিতাম । এবার বিরক্তির সুরে " ধুর-ধুর , আমি ও সব জানি গা । আরে বলছি তো, আমি ঠিক চালিয়ে নেব- তোমরা আগে সাবধানে থাকো দেকিনি। ঠাকুর ঠাকুর করে সব ভালো হয়ে যাক, সবাই ভালো ভাবে ফিরে এসো- তারপর না হয় হবে"। শেষের কথাগুলো বলতে বলতে মাসির গলাটা কেমন যেন কেঁপে গেল।
হ্যাঁ, মাসি আপনিও সাবধানে থাকবেন। 
বুক ফেঁটে বেরিয়ে আসা প্রবল বাষ্প চাপ কোনো রকমে সামলে সুজয় ফোনটা ছেড়ে দেয়। তার  ঝাপসা চোখের সামনে তখন কেবলই  দাড়িওয়ালা ,  বিস্ময়ের বিস্ময় সেই মানুষটার মুখ। যিনি বলেছিলেন " ভগবান তুমি যুগে যুগে দূত, পাঠায়েছ বারে বারে দয়াহীন সংসারে...."

=============












সন্তু চ্যাটার্জী 
আসানসোল
Share:

কবিতা ।। নিরাশাহরণ নস্কর





 

আলোপথ

 

মধ্যযামের কাছে শেষ প্রণিপাত রেখে

মুছে ফেলি অশ্রুজল...

            

হে অনাগত নিশিভোর, তোমার কাছেই

আমার বনবাস লেখা

 

বোঁটকা গন্ধের ঘ্রাণ, নর্দমার বিদ্রুপ প্রবাহ

স্নায়ুসুষুম্না বেয়ে রক্তক্ষরণ লেখে

আমাদের যাপন প্রদাহ...

 

ইতিহাস-প্রাচীন প্রদাহী-প্রবাহ আজ মোহনাসন্ধানী

হে আমার নবজন্মের গর্ভগৃহ

প্রশান্ত তিমির দেখো---

    খুলে রেখেছি মলিন মুখোশ ব্ল্কল

    আত্মাশ্রয়ী অহংচুর

    কোন ভান নেই উলঙ্গ শরীরে

 

এভাবেই ভোকাট্টা ঘুড়ি

গর্ভগৃহের দ্বারে গিয়ে দাঁড়ায়

উলঙ্গ শরীর জুড়ে প্রবল প্রশান্তি তার

নিঃস্ব হওয়ার নিঃসীম প্রশান্তি

 

সুতো কাটলেই জুড়ে যায়

উৎস এসে মোহনায়

 

আঁধার ঘরের আলো

আলোর চেয়েও জমকালো

 

অন্তিম প্রহরের কাছে শেষ প্রণিপাত রেখে বলি:

কোন পথ কাঁটা পথ নয়

সব পথ মিশে যায়

সেই আলোপথে

----০০----

Share:

অণুগল্প : ইন্দ্রাণী দত্ত






 লকডাউনের ব্যালকনি

.......................................


ঘড়িতে পাঁচটা বাজলেই এখন নিয়ম করে সপ্তর্ষি আর দেবযানী তাদের ছোট্ট মেয়ে রেবাকে নিয়ে ব্যালকনির দোলনাটায় এসে বসে ৷এই ব্যালকনিটাই  এখন বিশাল মরুভূমির এক টুকরো মরুদ্যান!কি একটা মারাত্মক অসুখ জীবনটাকে যেন শোবার ঘরে,বসার ঘরে কিংবা রোজ বিকেলে ব্যালকনিতে  বন্দি করে রেখেছে !!তবে সরকারি চাকুরে বাবু  সপ্তর্ষির মাস মাইনেতে বসে বসে কাটছে একরকম বেশ!

দেবযানী আর সপ্তর্ষি  ব্যালকনিতে বসে বসে পথচলতি মানুষদের দেখে আর দুজন মিলে খুনসুটি করে,কখনো কখনো সপ্তর্ষি পাড়ার বয়স্ক মানুষদের চলন বলন নকল করে দেবযানী কে খানিকটা আনন্দ দেয়....!তবে তাদের ব্যঙ্গ-কৌতুকের খুব শক্তিশালী একটা উপাদান ছিল গফফুর আলি !,দিন আনা দিন খাওয়া নির্মানকর্মী   গফফুর  সারাদিন রোদে মুখ পুড়িয়ে ,একটা টিফিন ক্যান সাইকেলে ঝুলিয়ে তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে ঘরে ফিরতো !এই চ্যাটুজ্যে,বন্দোপাধ্যায়,পালেদের মাঝে পড়ে গফফুরের নিজেকে খুব অসহায় লাগে,সরকারি যা সাহায্য পেয়েছিল তাও শেষ,তাই অগত্যা কাজে যেতেই হয় !গফফুরকে ভাঙাচোরা সাইকেলের  প্যাডেল করত হয় খুব অগোছলো ভাবে..আর এই দৃশ্যটি ছিল দেবযানী আর সপ্তর্ষির মূল হাসির খোরাক ৷তারা দুজন ব্যালকনি দিয়ে গফফুর কে দেখতো এমন ভাবে  যেন পাড়াতে হঠাৎ ভিন গ্রহের প্রানী এসে সাইক্লিং করছে !!!
আসলে যাদের মাথার ওপর ছাদ থাকে,ঘরে খাবার থাকে, ব্যাংকে টাকা থাকে  তারা ধর্ম, জাতি, অসহায় মানুষ , এদের থেকে ফূর্তি নেওয়ার রসদ খোঁজে...

সেদিন আচমকাই রেবা ব্যালকনির দোলনা দিয়ে পড়ে গেল, মাথা ফেটে রক্তাক্ত কান্ড!... রেবাকে নিয়ে যাওয়া হলো  একটি বেসরকারী নার্সিংহোমে,  অনেকটা রক্ত বেরিয়ে যাওয়ায় ডাক্তারবাবু তাড়াতাড়ি " ও পজেটিভ" ব্লাড জোগাড় করতে বললেন !নাহলে যে বিপদ !!

 এদিকে ব্লাড ব্যাংক রক্তশূন্য, দিশেহারা সপ্তর্ষি    তার এক বন্ধুকে ফোন করলো রক্তের জন্য,সে তো এই বলেই নাকচ করে দিলো যে,"এই সময় রক্ত দিতে গেল সংক্রমণ হতে পারে" ক্ষমা কর ভাই, পরিবার আছে !!!

সপ্তর্ষি আর দেবযানী নিজেদের মনকে কঠিন করেই ফিরে এসেছিল  নার্সিংহোমে অপ্রত্যাশিত কিছু শুনবে বলে,কিন্তু ডাক্তার বাবু জানালো একজন স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে গেছে,রেবা ভালোই আছে এখন!পরে অবশ্য ডাক্তার বাবু ডোনারের নাম বলেছিলেন! 

এখনোও সপ্তর্ষি,দেবযানী ব্যালকনির  রেলিং  ধরে ঝুঁকে পড়ে পথচলতি মানুষদের দেখে,গফফুর কেও দেখে ,কিন্তু গফফুরকে দেখে তাদের আর হাসি  আসে না এখন, কেমন যেন একটা অপরাধবোধ জাগে !

..........................................................
.                  


নাম: ইন্দ্রনী দও
ঠিকানা :রথতলা,পূর্ব বর্ধমান


Share:

কবিতা : অমৃতা চট্টোপাধ্যায়



ছায়াপুরুষ


মোমের আলোয় 
ঝুপ করে নেমে এল 
যার নাম অন্ধকার
থম মেরে বসে আছে হাওয়া কিন্তু
হাওয়ার কোনো পক্ষপাত নেই 
অবশ্যম্ভাবী  নৈঃশব্দ 
ছায়াপুরুষ  জানেন
অন্ধকারের  নিজস্বতা অতি ব্যাক্তিগত সিগারের গন্ধে মশগুল হয়ে আছে ঘর
আর আমরা তখন পরীক্ষাগারে
পাভলভের কুকুর 
পরস্পর মুখোমুখি 
শীত নয়, বসন্তই বলি এক বিস্ফোরণ
ঘটিয়ে ফেলেছি, ছায়াপুরুষ জানেন
সাদা পাত্রে যা অবশিষ্ট আছে তার নাম সুখেয় অমিয়! 
Share:

দুটি কবিতা ।। অর্যমা ভট্টাচার্য



(১)


আয়না

________


অঝোর দুপুর

বৃষ্টি-গন্ধ ভরা উঠোন

কাঁঠাল পাতার চুঁয়ে পড়া

টুপটুপে জলে 

মরূদ্যান খোঁজে চোখ,

হাত বাড়িয়ে ধরতে চায় বৃষ্টি-ফোঁটা।


চিলেকোঠার আকাশ থেকে

খুঁজে ফিরি ধারাপাত

রঙ্গনের মেঘ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে রক্তিম

সোঁদা বারুদের দীর্ঘশ্বাসে ফের…


আদিম শৈশব।



(২)


চোখ

______


বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে স্তব্ধতা
কালো পাহাড়ের গায়ে
সন্ধ্যে-বাতি জ্বালিয়েছে কেউ
                   হাজারে হাজারে,
ঘন্টাধ্বনি হাওয়ায় ওড়া
                           ডাকপিয়ন

দু-পাশের স্থির জলছবি
                স্থবির সাম্রাজ্য

শাসক,     
বড্ড উঁচুতে তুমি

           দেখতে পাও আমাদের !

======================

অর্যমা ভট্টাচার্য ( Aryama Bhattacharya)
হাটপুকুর, জি.আই.পি কলোনি, হাওড়া-৭১১১১২
চলভাষ : 8240000122


Share:

প্রবন্ধ ।। বটু কৃষ্ণ হালদার

২২ গজের বাইরে সৌরভ গাঙ্গুলী স্বমহিমায় মূর্তিমান


 
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী সম্বন্ধে যে কোনো তথ্য আমাদের কাছে অক্সিজেনের সমান। সৌরভ গাঙ্গুলীর ক্রিকেট জীবন বিশ্লেষণ করলে,আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় ক্রিকেটে বাঙ্গালীদের অবস্থান যে কতটুকু সে সম্বন্ধে একটা সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। সেই দৃষ্টিকোণ দিয়ে বিচার করলে ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভ গাঙ্গুলী এক ব্যতিক্রমী চরিত্র।বারবার ভারতীয় ক্রিকেটে তার লড়াইটা নতুন রূপে পেয়েছি। জীবনের শুরু থেকে লড়াইটা শুরু হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে তাকে বেঙ্গল ক্রিকেট দলের হয়ে খেলার জন্য নির্বাচন করা হয়। ঠিক সেই সময় দাদা স্নেহাসিশ গাঙ্গুলিকে বেঙ্গল ক্রিকেট দল থেকে অপসারিত করা হয়। জীবনের ক্ষীন আশা টুকু ও শেষ হয়ে যায়। হাল ছাড়েননি তিনি। ১৯৯০_১৯৯১ সালে এই দুই বছর তার জীবনের চরম মুহূর্ত। রঞ্জি ট্রফিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করার জন্য প্রথমবার ভারতীয় ক্রিকেট দলে খেলার জন্য সুযোগ পান। কিন্তু ডেবিউ ম্যাচে মাত্র ৩ রান করে আউট হন। যার ফলে ভারতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয় তাকে। আবার শুরু ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। পুনরায় তিনি রঞ্জি ট্রফি খেলতে শুরু করেন। সাফল্য আবার সামনে আসে। ১৯৯৩_৯৪,১৯৯৪_৯৫ এই দুই বছরে ডোমেস্টিক ক্রিকেটে ব্যাপকহারে রান করেন ধারাবাহিকভাবে। এছাড়া দিলীপ ট্রফি তে ১৭১ রানের সুন্দর ইনিংস খেলেন। পুনরায় তাকে হাজার ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ দেয়া হয়।টিম থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার পরেও ২০০৭ সালে যখন ভারতীয় দলে আবার সুযোগ পান তখন একসময় ক্যাপ্টেন হলেও তাকে বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিংয়ে পাঠানো হয়।তবে তাতে বিচলিত না হয়ে তিনি পারফরম্যান্স দিতে কসুর করেননি কখনো। সেই খারাপ সময়ে ডাবল সেঞ্চুরি করে কিছুটা সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন।
ভারত তথা বিশ্ব জুড়ে বাঙালির জয় জয় কার। একদিকে বাঙালি অর্থনীতি বিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায় এর বিশ্ব শিরোপার খেতাব জয়, অন্য দিকে এক সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়ানো বাঙালি ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী র ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদ লাভ স্মরণীয় দিনের বরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী থাকলো সমগ্র বিশ্ব। আন্তর্জাতিক স্তরে তার ক্রিকেট জীবন শুরুটা মোটেই ভালো ছিল না। ১৯৯৬ সালে তিনি জীবনের প্রথম টেস্ট খেলেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সেই থেকে লড়াইটা শুরু করেছিল। ভারতীয় ক্রিকেটে বাঙালিরা বরাবরই বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। সেখান থেকে সৌরভ গাঙ্গুলী ক্রিজে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে লড়াইটা দিয়ে এসেছে বরাবর। এক সময় ব্যাট হাতে ক্রিজে  দাঁড়িয়ে সারা বিশ্ব দাপিয়ে বেড়িয়েছে। যে সময় ভারতীয় ক্রিকেটের বহু ক্রিকেটার "ম্যাচ ফিক্সিংয়"কলঙ্কময় কর্মে জড়িয়ে পড়েছিলেন সে সময় তিনি ছিলেন নিখুঁত পরিপাটি। তার হাতে তুলে দেওয়া হয় দেশের অধিনায়কত্বের ভার। তার সময়ে বহু নতুন উদীয়মান তরুণ প্রতিভা নিজেদের জীবন প্রতিষ্ঠিত করেছিল ক্রিকেটের মাঠে। সেইসব ক্রিকেটাররা তাকে দেবতার আসনে বসিয়েছে। শচীন-সৌরভ জুটিতে মাইলফলক স্টোন পার করেছিলেন। পুরনো রেকর্ড ভেঙে,নতুন রেকর্ড গড়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। সেই ক্রিকেটের বরপুত্রর  হাতে ধরে চালু হতে চলেছে বিশ্ব চর্চিত ও অপেক্ষিত গোলাপী বলের শুভ সূচনা। তাও আবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনস। ভারত-বাংলাদেশের দিন রাতের প্রথম গোলাপী বলের এই টেস্ট ম্যাচে আমন্ত্রিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ক্রিকেট। তার কান্ডারী সবার প্রিয় সৌরভ গাঙ্গুলী। আবারো সৌরভ গাঙ্গুলীর হাত ধরে বিশ্ব ক্রিকেটের দরবারে নতুন ভাবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে ভারত তথা বিশ্ববাসী।
বাংলার সেরা, বাঙালির গৌরব, প্রকৃত রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর নাম সৌরভ গাঙ্গুলী।
ক্রিকেট জীবনে তার পদচারণায়,ভাটার টানে ও ভারতে নতুন কাপ এসেছে। ২২ গজে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছ,মেরেছ,চার, ছক্কা। স্টেডিয়াম পার করা মনমুগ্ধকর ছয় মারার সাথে সাথে স্টেডিয়ামের সমস্ত দর্শক উঠে দাড়িয়ে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানিয়েছে। কমেন্টেটর বক্স থেকে ধারাভাষ্যকারদের মুখ থেকে বহুবার শোনা গিয়েছে_"oh my God, what a big six",this is Maharaj Sourav Ganguly"। ক্রিকেটে তুখোড় অনেক দাপুটে বোলার তার ব্যাটের ত্রাসে হারিয়ে গেছে ক্রিকেটের ইতিহাসে।অনেক পিচে বুঝিয়ে ছিলে তুমি ব্যাটের আসল মহারাজা। মহারাজের চিন্তা ধারায় এসেছে,ক্রিকেটে নতুন ধাপ। ভারতীয় ক্রিকেটে সে সময়ে এসেছিল নবজাগরণ। মহারাজা ছিলেন ক্রিকেটের আদর্শ নেতা।দিশা হীনদের শিক্ষা গুরু।উদীয়মান, প্রতিভার যোগ্য পূর্বসুরী যাদের ক্রিকেট ছিল দিনের শুরু। সৌরভ গাঙ্গুলীর হাত ধরেই উঠে এসেছিল যুবরাজ সিং জাহির খান মোহাম্মদ কাইফ হরভজন সিং এর মতো উদীয়মান তরুন প্রতি ভা রা।এক সময়ে কালো বাজারীদের জুয়ার টানে হ্যান্সি ক্রোনিয়ে থেকে শুরু করে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন মেখেছে কলঙ্কের মাটি। কিন্তু মহারাজা চরিত্র দেশের অহংকার ছি ল নিখুঁত পরিপাটি। আজও মনে পড়ে ইংল্যাণ্ডের মাটিতে,ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জেতার স্মৃতি। চোখে চোখ রেখে লড়াই করা বোধ হয় সৌরভ গাঙ্গুলির থেকে বোধহয় কেউ বেশি জানে না।বিদেশের মাটিতে ও সবার মন জয় করেছে। মহারাজা র ঝুলিতে হাজারো রেকর্ড গড়ে ফিরিয়েছ দেশের গৌরব। তিনি আর কেউ নন,বাংলা মায়ের দামাল ছেলে সবার প্রিয় দাদা সৌরভ  গাঙ্গুলী আজ সবার চোখের মনি।
উপরোক্ত বর্ণিত সমস্ত তথ্যই সৌরভ গাঙ্গুলীর ক্রিকেট জীবনকে ঘিরে। কিন্তু ক্রিকেট জীবনের বাইরে ও একটা জগত আছে, সেটা হল মনুষ্য জগত। সেই জগতে আমাদের প্রিয় দাদা শুধুমাত্র একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটার নন, একজন যোগ্য সমাজসেবী ও বটে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে করোনা আবহাওয়াতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে মনুষ্য জাতি। তাই করোনা সম্পর্কে নতুন করে বিশেষ কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে দেশের সরকার লকডাউন ঘোষণা করেন।আর তাতেই সবথেকে বেশি শোচনীয় অবস্থা হয়ে পড়ে দীন দরিদ্র অসহায় খেটে খাওয়া মানুষগুলো। শুধু তাই নয় দেশের আর্থিক পরিস্থিতি বেশ খারাপ  হয়ে পড়ছে ক্রমশ। দেশজুড়ে করনা মোকাবিলায় এগিয়ে আসছেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। বিশেষ করে দেশের ক্রীড়াবিদরাও নিজেদের সাধ্যমত সাহায্য করছেন। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি মহারাজা সৌরভ গাঙ্গুলী নাম। দীন দরিদ্র অসহায় মানুষগুলোর কথা ভেবে তিনি পঞ্চাশ লক্ষ টাকার চাল দানের কথা জানিয়েছেন। শুধু তাই নয় নিজের উদ্যোগে মোট ১৫ হাজার কেজি চাল বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই চাল থেকে বেলুড় মঠের মহারাজের হাতে তিনি দুই হাজার কিলো চাল তুলে দেন। এছাড়া তিনি চাল সাহায্য করেন রাসবিহারী মোড় সংলগ্ন ভারত সেবাশ্রম সংঘ তে, কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স থেকেও চাল বিতরণ করার ব্যবস্থা করে দেন। শুধু তাই নয় কলকাতায় যে সকল এনজিও এই দুঃসময়ে গরিব মানুষের হয়ে কাজ করছেন, তিনি তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। তাদের হাতে ও চাল তুলে দেন। লকডাউন এর শুরুতে_"আমরা কি চা খাব না"কাকার ভিডিও ভাইরাল হয়, সেই চা কাকার বাড়িতেও চাল পৌঁছে দেন। প্রিন্স অফ ক্যালকাটার এ হেন উদ্যোগকে দেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন অনুগামীরা কুর্নিশ জানিয়েছেন। বাংলা মায়ের কোলে এমন সন্তান আছে বলেই আজও বাংলা মা গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে বেঁচে আছে। দাদার এমন উদ্যোগ চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে যে মানবিকতা আজও পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যায়নি। তাই তো এসময় মনে পড়ে যায় বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকার কন্ঠে গাওয়া সেই গানটি,_"মানুষ মানুষের জন্য/জীবন জীবনের জন্য"।
---------------------------------
 
কৃষ্ণ হালদার, কবর ডাঙ্গা, কল_১০৪
Share: